চট্টগ্রাম 3:36 am, Saturday, 21 September 2024

একমাত্র মেয়ের সাথে সময় কাটানো হয়নি সেলিমের

গত জানুয়ারীতে দুই বছর পর ছুটিতে মো. সেলিম দেশে এসেছিলেন প্রিয়জনের সান্নিধ্য নিতে। বিশেষ করে তার একমাত্র মেয়ে তাইবা ইসলামের সাথে সময় কাটাতে এসেছিলেন তিনি। প্রবাসে থাকাকালীন ভিডিও কলে মিষ্টি মিষ্টি কথা বলতো মেয়ে তাইবা। মেয়ের টানেই এবার বেশ সময় নিয়ে দেশে আসা তার। তাইবার জন্মের পর বাবার সাথে একবার সাক্ষাৎ হলেও তখন সে খুব ছোট ছিল। সবে মাত্র কথা বলা শুরু করেছে মেয়েটি। তাইবাকে খুব ভালোবাসেন তার বাবা। বাবার ভালোবাসা সেও সহজেই বুঝতে পেরেছিল। খুনসুটিতে মেতে উঠতো বাবার সাথে। সেলিম যখন বাইরে থেকে বাড়ি আসতো তাইবা তখন দৌড়ে গিয়ে জড়িয়ে ধরে বাবাকে চুমু খেত। সেলিমও মেয়ের সাথে সময় কাটাতে বাড়িতেই থাকত। পরিবারের সাথে আসন্ন ঈদ করেই নিজ কর্মস্থলে ফেরার কথা ছিল সেলিমের। কিন্তু মেয়ের সাথে পুরো সময়টা কাটানোর আগেই মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে তার

সেলিমের তিন বছর বয়সী কন্যা তাইবা এখনো জানে না তার বাবা যে আর কোনদিন তাকে আদর করবেনা। আর কোনদিন তার বাবাকে দেখতে পাবে না। নিমিষেই তার মৃত্যুতে সব উলট পালট হয়ে গেল।

প্রবাসী মো. সেলিম(৩৭) চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার স্বনির্ভর রাঙ্গুনিয়া ইউনিয়নের রাজঘাটা এলাকায় আবুল কাশেমের ছেলে। শনিবার (১৮ মার্চ) দুপুরে বাজার থেকে কেনাকাটা করে মোটরসাইকেল যোগে বাড়ি ফিরছিলেন তিনি। এসময় মরিয়মনগর গাবতল ডিসি সড়কের তেলি পুকুর পাড় এলাকায় সিএনজির সাথে তার ধাক্কা লেগে গুরুতর আহত হয়। পথচারীরা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে কর্তৃব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। গতকাল রোববার জানাজা শেষে তার দাফন কাজ শেষ সম্পন্ন করা হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সেলিম যে আর নেই তা এখনো জানেনা তার ৩ বছর বয়সী মেয়ে তাইবা। তবে পরিবারের সবার কান্না দেখে নিজেও সামিল হয়েছে সে কান্নায়। এদিকে সেলিমকে এক নজর দেখতে তার বড় ভাই ইসকান্দর দুবাই থেকে দেশে এসেছেন। এসময় পুরো বাড়িতে কান্নার রোল ওঠে। তারা সবাই মানতে নারাজ পরিবারের পাঁচ ভাইয়ের সবার ছোট সেলিম আর নেই।তার মৃত্যুর শোকে দেশে থাকা তার অন্য ভাইয়েরাও অসুস্থ হয়ে পড়েছে। সবাইকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। গত চার বছর আগে পাশের গ্রামের শাহেদা আক্তারের সাথে সেলিমের বিয়ে হয়েছিল। স্বামীকে হারিয়ে সেও নির্বাক চেয়ে আছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

মীরসরাই প্রফেশনাল সোসাইটির উদ্যোগে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ শিক্ষার্থীদের নগদ অর্থ প্রদান

একমাত্র মেয়ের সাথে সময় কাটানো হয়নি সেলিমের

Update Time : 08:35:58 pm, Sunday, 19 March 2023

গত জানুয়ারীতে দুই বছর পর ছুটিতে মো. সেলিম দেশে এসেছিলেন প্রিয়জনের সান্নিধ্য নিতে। বিশেষ করে তার একমাত্র মেয়ে তাইবা ইসলামের সাথে সময় কাটাতে এসেছিলেন তিনি। প্রবাসে থাকাকালীন ভিডিও কলে মিষ্টি মিষ্টি কথা বলতো মেয়ে তাইবা। মেয়ের টানেই এবার বেশ সময় নিয়ে দেশে আসা তার। তাইবার জন্মের পর বাবার সাথে একবার সাক্ষাৎ হলেও তখন সে খুব ছোট ছিল। সবে মাত্র কথা বলা শুরু করেছে মেয়েটি। তাইবাকে খুব ভালোবাসেন তার বাবা। বাবার ভালোবাসা সেও সহজেই বুঝতে পেরেছিল। খুনসুটিতে মেতে উঠতো বাবার সাথে। সেলিম যখন বাইরে থেকে বাড়ি আসতো তাইবা তখন দৌড়ে গিয়ে জড়িয়ে ধরে বাবাকে চুমু খেত। সেলিমও মেয়ের সাথে সময় কাটাতে বাড়িতেই থাকত। পরিবারের সাথে আসন্ন ঈদ করেই নিজ কর্মস্থলে ফেরার কথা ছিল সেলিমের। কিন্তু মেয়ের সাথে পুরো সময়টা কাটানোর আগেই মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে তার

সেলিমের তিন বছর বয়সী কন্যা তাইবা এখনো জানে না তার বাবা যে আর কোনদিন তাকে আদর করবেনা। আর কোনদিন তার বাবাকে দেখতে পাবে না। নিমিষেই তার মৃত্যুতে সব উলট পালট হয়ে গেল।

প্রবাসী মো. সেলিম(৩৭) চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার স্বনির্ভর রাঙ্গুনিয়া ইউনিয়নের রাজঘাটা এলাকায় আবুল কাশেমের ছেলে। শনিবার (১৮ মার্চ) দুপুরে বাজার থেকে কেনাকাটা করে মোটরসাইকেল যোগে বাড়ি ফিরছিলেন তিনি। এসময় মরিয়মনগর গাবতল ডিসি সড়কের তেলি পুকুর পাড় এলাকায় সিএনজির সাথে তার ধাক্কা লেগে গুরুতর আহত হয়। পথচারীরা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে কর্তৃব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। গতকাল রোববার জানাজা শেষে তার দাফন কাজ শেষ সম্পন্ন করা হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সেলিম যে আর নেই তা এখনো জানেনা তার ৩ বছর বয়সী মেয়ে তাইবা। তবে পরিবারের সবার কান্না দেখে নিজেও সামিল হয়েছে সে কান্নায়। এদিকে সেলিমকে এক নজর দেখতে তার বড় ভাই ইসকান্দর দুবাই থেকে দেশে এসেছেন। এসময় পুরো বাড়িতে কান্নার রোল ওঠে। তারা সবাই মানতে নারাজ পরিবারের পাঁচ ভাইয়ের সবার ছোট সেলিম আর নেই।তার মৃত্যুর শোকে দেশে থাকা তার অন্য ভাইয়েরাও অসুস্থ হয়ে পড়েছে। সবাইকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। গত চার বছর আগে পাশের গ্রামের শাহেদা আক্তারের সাথে সেলিমের বিয়ে হয়েছিল। স্বামীকে হারিয়ে সেও নির্বাক চেয়ে আছে।