রাঙ্গুনিয়া উপজেলায় প্রকাশ্যে কৃষকদের কাছ থেকে চাঁদা নিতে এসে মো. জাহাঙ্গীর (৩৪) ওরপে বদি জাহাঙ্গীর নামে এক সন্ত্রাসীকে অস্ত্রসহ আটক করে পুলিশ দিয়েছে এলাকাবাসী।
সোমবার (১১ ডিসেম্বর) সকাল ১১টায় উপজেলার দক্ষিণ রাজানগর ইউনিয়নের খোরশেদ তালুক মোরশেদ এর গাছ বাগান সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে ৯৯৯ এ কল দিলে পুলিশ এসে একটি দেশীয় অস্ত্রসহ জাহাঙ্গীরকে থানায় নিয়ে যায়।
জাহাঙ্গীর একই ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড নইন্যার বাড়ি এলাকার মৃত মো. আমিরুজ্জমার পালক সন্তান। তবে তার নিজ বাড়ি কোথায় এই ব্যাপারে কোন তথ্য কেউ জানেননা।
স্থানীয়রা জানান, বেপরোয়া জাহাঙ্গীর প্রায় সময় এখানে সাধারণ মানুষকে বিভিন্নভাবে হুমকি ও চাঁদা দাবি করে। সে সাধারণ মানুষদের বিভিন্ন ভাবে ভয়ভীতি দেখায়। সোমবার সকালে স্থানীয় কৃষক ও ট্রাক্টর চালকদের কাছে চাঁদা খুজতে এলে তারা দিতে অপারগ প্রকাশ করে, এসময় অস্ত্র বের করে তাদের মেরে ফেলার হুমকি দেন। এসময় স্থানীয় কৃষক ও এলাকাবাসী তাকে আটক করে পুলিশে খবর দেন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. রাশেদ ঘটনার সত্যতা প্রকাশ করে বলেন, সে প্রায়শই এখানে এসে চাঁদা দাবি করেন। আজকেও চাঁদা খুঁজতে এসে স্থানীয়দের হাতে আটক হয়।
রাঙ্গুনিয়া থানার এসআই মো. শাহাদাত জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে একটি দেশীয় অস্ত্র সহ জাহাঙ্গীর নামে এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে। আইনী প্রক্রিয়া শেষে আদালতে প্রেরণ করা হবে।
জানা যায়, গ্রেপ্তারকৃত জাহাঙ্গীর ছিনতাইকারী ও ডাকাতি চক্রের অন্যতম সক্রিয় সদস্য। ২০২০সালে প্রতিদিনের বাংলাদেশ রাঙ্গুনিয়া প্রতিনিধির ক্যামেরা চুরির দায়ে ৬ মাস জেল খেটেছিল। এরপর জামিনে বের হওয়ার এক সপ্তাহের ব্যবধানে সে লালানগর ইউনিয়ন দিন-দুপুরে অস্ত্র ধরে এক এনজিও কর্মীর কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা এবং দক্ষিণ রাজানগরের সোনারগাঁও রাস্তার মাথা থেকে ১কিলোমিটার দূরে হালিমপুর-রাণীরহাট সড়কের চিতাখোলা এলাকা থেকে কোকাকোলা কোম্পানির গাড়ি আটকিয়ে ১লক্ষ ৪৫ হাজার টাকা ছিনতাই করে। এসময় একজনকে মারধরও করেছিল সে।
স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা যায়, মো. জাহাঙ্গীর তার গ্যাং বাহিনী নিয়ে উত্তর রাঙ্গুনিয়ায় ঘটে যাওয়া বিভিন্ন সন্ত্রাসী হামলায় অংশ নেয়। ২০১৯ সালের ৬ই ডিসেম্বর লালানগর ইউপি সদস্য মো. শাহ আলমকে গুলি করে হত্যা চেস্টার সাথে সে সরাসরি সম্পৃক্ত। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি জানান, বেপরোয়া জাহাঙ্গীর এক হাজার টাকার বিনিময়ে মানুষ মারতে দ্বিধাবোধ করেনা। ভাড়াটে সন্ত্রাসী হিসেবে পরিচিত এই জাহাঙ্গীরের নানা সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে অতিষ্ট এলাকাবাসী। তাকে গ্রেপ্তারে এলাকায় স্বস্তি ফিরলেও যেন আইনের ফাঁকে আবারও জামিনে বেরিয়ে আসতে না পারে সেজন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন ভুক্তভোগীরা।