চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলায় সিলিং ফ্যানের সাথে ফাঁস লাগানো অবস্থায় পম্পি চৌধুরী(২৮) নামে এক গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) ভোর ৪ টার দিকে উপজেলার পারুয়া ইউনিয়নের শাহাব্দিনগর হাজারীবাড়ি থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।পম্পির পরিবারের অভিযোগ, তাকে হত্যা করা হয়েছে।
পম্পি চৌধুরী ওই এলাকার লিটন মালাকারের স্ত্রী। ঘটনার পর তার স্বামী লিটনকে আটক করে থানায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
স্থানীয় চেয়ারম্যান ও এলাকাবাসীর বরাত দিয়ে জানা গেছে, পম্পি চৌধুরীর সাথে তার স্বামী লিটন মালাকারের দীর্ঘদিন যাবত বিভিন্ন বিষয়ে মনোমালিন্য চলে আসছিলো। পম্পি গতকাল সন্তানদের উপবৃত্তির টাকা দিয়ে তাদের জন্য ব্যাগ ও প্যান্ট কিনে দিতে বলে লিটনকে। এসময় লিটন পম্পিকে বকাবকি করে। পরে রাতে পম্পি খাবার খেয়ে তার দুই সন্তান নিয়ে ঘুমাতে যায়। তার স্বামী ছিল অন্য রুমে। রাত ৩টার দিকে তাদের ৬ বছর বয়সী কন্যা শিশু প্রস্রাব করার জন্য ওঠে দেখে তার মা ফ্যানের সাথে ঝুলছে। তাদের চিৎকার চেচামেচিতে ঘরের সবাই দৌড়ে এসে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গলায় ওড়না পেছানো অবস্থায় তার ঝুলন্ত লাশ দেখতে পায়। পরে স্থানীয় চেয়ারম্যানের সহযোগিতায় পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে।
গৃহবধূর শ্বাশুড়ি পটো মালাকার জানান, প্রায় ১২ বছর আগে তার ছেলে লিটন মালাকারের সাথে পম্পি চৌধুরীর পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। তাদের ঘরে ১০ বছর ও ৬ বছর বয়সী এক ছেলে ও এক কন্যা সন্তান আছে। গত ৫ মাস আগে আমার ছেলে লিটন প্রবাস থেকে দেশে আসে। এর মাস খানেক পর তার সাথে মনোমালিন্য হয়ে পম্পি বাপের বাড়ি চলে যায়। গত ১০/১২ দিন আগে পারিবারিক এক বিয়ের জন্য তাকে আনা হয়। এরপরে পম্পি তার স্বামী মদ, গাঁজা খেয়ে বাড়ি আসে বলে অভিযোগ করেন। দুইদিন ধরে লিটন আলাদা রুমে থাকছে বলে জানান। তিনি এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেন।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান একতেহার হোসেন বলেন, রাত পৌনে চারটার দিকে লিটন কল দিয়ে তার স্ত্রী ফাঁস খেয়েছে বলে জানান। পরে আমি পুলিশসহ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ নামানো অবস্থায় দেখতে পায়। পম্পি ও তার স্বামী লিটনের মধ্যে পারিবারিক মনোমালিন্য ছিল। নিহত গৃহবধূ এর আগে রাগ করে বাপের বাড়ি চলে গিয়েছিল। তাদের পারিবারিক একটা অনুষ্ঠান ছিল সে সুবাদে তাকে বাড়ি আনা হয়।
এদিকে ঘটনার পর রাঙ্গামাটি থেকে পম্পির পরিবারের লোকজন ঘটনাস্থলে আসে। তারা অভিযোগ করেন, তার স্বামী লিটন মালাকার তাকে হত্যা করেছে।
রাঙ্গুনিয়া থানার ওসি মাহাবুব মিল্কি জানান, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। তার স্বামী লিটন মালাকারকে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এ ঘটনায় নিহতের বাবা মন্টু চৌধুরী বাদী হয়ে তার স্বামীর বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে।