মাত্র ৪ মাস পূর্বে জন্ম নেয়া সন্তানের মুখ দেখার আগেই পরপারে পাড়ি জমাতে হলো ওমান প্রবাসী রেমিট্যান্স যোদ্ধা শাহজানকে(৪৫) কে। এখন নিহতের হাটহাজারী উপজেলার মেখল ইউনিয়নের গ্রামের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম।
প্রিয়জনকে হারিয়ে দিশেহারা তার পরিবার। স্ত্রী, সন্তান ও স্বজনদের কান্নায় ভারী হয়ে উঠেছে এলাকার পরিবেশ।
শনিবার(৩১ ডিসেম্বর) বিকালের দিকে মেখলে মরহুমের বাড়িতে গেলে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা ঘটে। গোটা পরিবারে চলছে শোকের মাতম। গ্রামবাসীও তার এমন মৃত্যুতে শোকাহত। নিহতের স্ত্রীর কান্নার শব্দে এলাকার আকাশ বাতাশ ভারি হয়ে উঠেছে। “কেনো আল্লাহ আমাকে এতোবড় সাজা দিলেন, আমার সন্তানদের কি হবে, তারা এতিম হয়ে গেলো”এসব বলে বলে বিলাপ করতে করতে বার বার মুর্ছা যাচ্ছিলের নিহতের স্ত্রী।
জানা যায়, হাটহাজারী উপজেলার ৮ নং মেখল ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডস্থ আমির হোসেন বাড়ীর মো. নুর হোসেনের বড় ছেলে রেমিট্যান্স যোদ্ধা প্রবাসী মো.শাহজান ওমানের মিসফাহ এলাকায় একটা কোম্পানিতে গাড়ির গ্যারেজে কাজ করতো। গত শুক্রবার ৩০ ডিসেম্বর ছিলো তার ছুটির দিন। আর ছুটির দিনে বাড়তি আয়ের আশায় মাসকেট শহরের জেপরিন নামক স্থানে কাজ করতে যায় সে। সেখানে কাজ করার সময় দূর্ঘটনার শিকার হয়ে গুরুতর আহত হলে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে দ্রুত ওমানের রাজধানী মাসকাটের ওথাইয়া এলাকার সরকারি কোলা হাসপাতালে নিয়ে যায়। ওইদিন সন্ধ্যার দিকে ওখানেই আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গুরুতর আহত শাহজান মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। তার এমন মর্মান্তিক মৃত্যুতে শোকে পাথর গোটা পরিবার। পরিবারের কর্মক্ষম বড় সন্তানকে হারিয়ে সবাই এখন দিশেহারা। গত প্রায় ১৮ বছর আগে ভাগ্য পরিবর্তনের আশায় ওমানে পাড়ি জমানো শাহজান শেষবারের মতো গত ৯ মাস পূর্বে দেশে ছুটি কাটিযে পুনরায় নিজ কর্মস্থল ওমানে ফিরে যান। তখন পরিবারের সাথে শেষ দেখা করে যাওয়া শাহজান ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে এবার লাশ হয়ে দেশে আসছে। বর্তমানে মরহুমের লাশ ওই হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হয়েছে।
নিহতের স্ত্রীর ভাই বেলালের সাথে কথা হলে তিনি কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, মরহুম শাহজানের তিনটি কন্যা সন্তান রয়েছে। প্রথম মেয়ের বয়স ১০ বছর, আর ছোট মেয়েটার জন্ম হয় মাত্র ৪ মাস আগে। যে এখনও তার জন্মদাতা বাবার স্পর্শও পায়নি। পরিবারের স্বচ্ছলতার জন্য প্রবাস জীবনে পাড়ি জমিয়েছিলেন শাহজান ভাই, কিন্তু স্বচ্ছলতার জায়গায় আজ পরিবারে আহাজারি ছাড়া কিছু নেই।’ তিনি এবার ছুটিতে দেশে আসলে নিজ ঘরের চলমান নির্মাণকাজ সমাপ্ত করারও কথা ছিলো। ভাইয়ের সে আশা আর পূরন হলো না।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া শেষে ২/৩ দিনের মধ্যে লাশ দেশে আনা হবে।