দেশের চতুর্থ গ্রীণ শীপ ইয়ার্ড হতে যাওয়া চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের কেআর শীপ রিসাইক্লিং ইয়ার্ড পরিদর্শন করেছে ১৪ সদস্যের জাপানি প্রতিনিধি দল। পরিদর্শন শেষে তারা এই শীপ ইয়ার্ডের পরিবেশ, শ্রমিকদের নিরাপত্তা, বর্জ্য সংরক্ষণ ব্যবস্থাসহ নানা ইস্যুতে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। একইসাথে ইয়ার্ডের সার্বিক ব্যবস্থাপনার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন তারা।
সোমবার (২২ মে) বেলা সাড়ে এগারোটা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত সীতাকুণ্ডের কুমিরার সমুদ্র তীরে অবস্থিত ইয়ার্ডটি ঘুরে দেখেন তারা। পরিদর্শনে জাপান শীপ ওনার্স এসোসিয়েশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট কেইজি টমোডার নেতৃত্বে অংশ নেন এন ওয়াইকে লাইনের জেনারেল ম্যানেজার ও জাপানিজ শীপ রিসাইক্লিং কমিটির সদস্য টাকুয়া কইজুমি, এনএস ইউনাইটেড কাইয়ুন কাইসা ও জাপানিজ রিসাইক্লিং কমিটির বিকল্প সদস্য হিরোকি তানাকা, ক্লাস এনকে’র ম্যানেজার টাকেশি নারেসী, এমএলআইটির পরিচালক ড. মাসানোরী যুসিদা, এনওয়াইকে লাইনের ম্যানেজার জিগামি নবয়ুকি, জেএসএ’র ডিপুটি ম্যানেজার ইয়ামাগামি হিরোয়ুকি, কেএর ডিপুটি জেনারেল ম্যানেজার কুদু ইয়াসুশি, এনকে ক্লাস টিএলডি তানিগুচি রাইয়ুয়া, ইন কর্পোরেশন জেএনএস অতসুকি সুমিয়ুকি, এমওএল এর তাকাহাসি নবয়ুকি ও আকিয়ামা নাইয়ুকি।
এর আগে বেলা এগারোটায় কেআর শীপ রিসাইক্লিং ইয়ার্ডে পৌঁছান ১৪ সদস্যের জাপানি প্রতিনিধি দল। এসময় কেআর শীপ রিসাইক্লিং ইয়ার্ডের কর্ণধার ও কে,র,আর গ্রুপের ডিরেক্টর তসলিম উদ্দিন প্রতিনিধিদের সদস্যদের ফুলেল শুভেচ্ছা ও উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান। পরে প্রতিষ্ঠানটির সেমিনার কক্ষে এক আলোচনায় মিলিত হন সকলে। আলোচনা সভায় জাপানি প্রতিনিধি দলের মতবিনিয়ম করেন প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার তসলিম উদ্দিন ও কনসালটেন্ট মেরিন ইঞ্জিনিয়ার মাহবুব আলম। পরে প্রতিনিধি দল পুরো শীপ ইয়ার্ডটি ঘুরে দেখেন। বিশেষ করে স্ক্রাপ জাহাজ কাটার কাজ প্রত্যক্ষ করেন তারা। এসময় সিড়ি বেয়ে জাহাজের উপরে ওঠে দেখেন প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। পরে ইয়ার্ডের জরুরী চিকিৎসা ইউনিট, বর্জ্য সংরক্ষণাগার, এসবেস্টস সংরক্ষণাগার, নিরাপদ পানির প্লান্ট, শ্রমিকদের গোসল, ওয়াশ, খাওয়ার কক্ষ পরিদর্শন করেন।
পরিদর্শন শেষে তারা কেআর শীপ রিসাইক্লিং ইয়ার্ডের ব্যবস্থাপনার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন। সন্তুষ্টি প্রকাশ করে জাপান শীপ ওনার্স এসোসিয়েশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট কেইজি টমোডা বলেন, কেআর শীপ রিসাইক্লিং ইয়ার্ডের পরিবেশ অত্যন্ত ভালো। ইয়ার্ডের প্রতিটি ইউনিট আমরা ঘুরে দেখেছি। বিশেষ করে নিরাপত্তাজনিত ব্যাপারগুলো খুবই স্ট্রং এবং পরিকল্পিত। একটি গ্রীণ ইয়ার্ডের জন্য যা যা প্রয়োজন তার সবটা এখানে চোখে পড়ে। আমরা এতে খুবই সন্তুষ্ট।
ক্লাস এনকে’র ম্যানেজার টাকেশী নারেশী বলেন, কেআর শীপ রিসাইক্লিং ইয়ার্ড বাংলাদেশের চতুর্থ গ্রীণ শীপ ইয়ার্ড হতে যাচ্ছে। মোট ৪ টি শীপ ইয়ার্ড আমাদের ক্লায়েন্ট হয়েছে। তার মধ্যে কেআর অন্যতম। খুব দ্রুত তারা সনদ পেতে যাচ্ছেন। সার্বিক অবস্থা সন্তোষজনক।
পরিদর্শন শেষে ভাটিয়ারী গলফ এণ্ড কান্ট্রি ক্লাবে মধ্যাহ্ন ভোজ সারেন জাপানি প্রতিনিধি দল। পরে তারা চট্টগ্রামের শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের উদ্দেশ্য রওয়ানা হন। সেখান থেকে আজ রাতেই জাপানের উদ্দেশ্য বাংলাদেশ ছাড়বেন তারা। প্রসঙ্গত, গত চারদিন ধরে বাংলাদেশের ৩ টি গ্রীণ ইয়ার্ড (পিএইচপি, এস এন কর্পোরপশন, কবির শীপ ব্রেকিং ইয়ার্ড) ও বেশ কয়েকটি নন গ্রীণ ইয়ার্ড পরিদর্শন করেন এই প্রতিনিধি দলটি। একইসাথে বাংলাদেশ শীপ ব্রেকার্স এণ্ড রিসাইক্লার্স এসোসিয়েশনের নেতাদের সঙ্গে একাধিক বৈঠকে মিলিত হন তারা।