চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলায় পতিত স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের দুই এমপির বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা, ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এদের একজনের নাম দিদারুল আলম অন্যজন এস এম আল মামুন। একই সাথে মামলায় আরো ১৩১ জনকে আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে ৫৩ জন এজাহারভূক্ত এবং অজ্ঞাত আরও আশি জনকে আসামি করা হয়।
৫ অক্টোবর সীতাকুণ্ড মডেল থানায় দায়েরকৃত মামলার ১ নং আসামি এস এম আল মামুন ২০২৪ সালে সাত জানুয়ারিতে আমি-ডামির নির্বাচনে এমপি হয়ে অল্প সময়ের মধ্যে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিলেন। এর আগে একই কায়দায় দুইবার উপজেলা চেয়ারম্যান ছিলেন মামুন। তার নেতৃত্বে সীতাকুণ্ডে পাড়ায় মহল্লায় সন্ত্রাসী গ্রুপ গড়ে ওঠে। যাদের হত্যা, চাঁদাবাজি ও হামলার ভয়ে প্রতি মুহূর্ত ভীত-সন্ত্রস্ত থাকতে হত সীতাকুণ্ডবাসীকে। এদেরই একজন সাইদুল ইসলাম প্রকাশ সেভেন মার্ডার ইসলাম। যিনি এ মামলার ৩নং আসামি।
মামলা দুই নং আসামি দিদারুল আলম ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারিতে ভোটারবিহীন ও ২০১৯ সালের ৩ জানুয়ারিতে রাতের ভোটের নির্বাচনে এমপি হন। এরপর বিরোধী রাজনৈতিক দল দমনে ব্যাপক মামলা হামলা শুরু করেন দিদারুল আলম। এ সময় অসংখ্য ছাত্র ও নিরীহ লোককে মামলার আসামি করা হয়। আরেক দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী সীতাকুণ্ডের বারৈয়াঢালা ইউনিয়নের রেহান উদ্দিন প্রকাশ সবজি চোর রায়হানকে এ মামলার ৪ নং আসামি করা হয়েছে। মামলায় উল্লেখিত অন্য আসামীরা ও সীতাকুণ্ডের বাসিন্দা।
মামলার বাদি বারৈয়াঢালা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান প্রার্থী ও জিয়া মঞ্চ চট্টগ্রাম উত্তর জেলার সভাপতি অহিদুল ইসলাম চৌধুরী শরীফ এজাহারে উল্লেখ করেন, ২০১৩ সাল থেকে বাইশ সাল পর্যন্ত দফায় দফায় ৬ বার তার ও তার পরিবারের ওপর হামলা করেছে আসামিরা। এর মধ্যে পাঁচবার তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে তার বাড়িতে হামলা ভাঙচুর ও লুটপাট করে। ষষ্ঠবার ২০২২ সালে তার নিজ এলাকার মসজিদে রমজান মাসে ইফতার চলাকালীন হামলা করা হয়। এসময় তিনি গুরুতর আহত হন।
অহিদুল ইসলাম জানান, চেয়ারম্যান প্রার্থী হওয়ায় আওয়ামী সন্ত্রাসীদের রোসানলে পড়েন তিনি। আসামিগণ তার বাড়িতে হামলার সময় সিসিটিভির ক্যাবল বিচ্ছিন্ন করে এলোপাথারি ভাঙচুর চালাতো। প্রতিবারই বাড়িতে না থাকায প্রাণে বেঁচে যান তিনি। সে সময় দেশের জাতীয় ও আঞ্চলিক শীর্ষ পত্রিকায় এ সকল হামলার সংবাদ প্রকাশিত হয়।
সীতাকুণ্ড মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি মজিবুর রহমান বলেন, মামলার তদন্ত করা হচ্ছে। একই সাথে আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযানও চলছে।
প্রসঙ্গত, পতিত স্বৈরাচার সরকারের উল্লেখিত দুই এমপির বিরুদ্ধে এ নিয়ে দুটি মামলা দায়ের করা হল। এর আগে চট্টগ্রাম আদালতে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছিল।