চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বাড়বকুণ্ডে সরকারি কর্মচারী আলতাফ হোসেনের বিরুদ্ধে দরিদ্র কৃষকের কলা বাগান কেটে জোরপূর্বক জমি দখল করার অভিযোগ ওঠেছে। এ ঘটনায় মানববন্ধন করেছে ভুক্তভোগী ওই কৃষক ও তার পরিবারের সদস্যরা। একইসাথে থানায় অভিযোগও দায়ের করেছেন তিনি। একমাত্র চাষের জমিটি আলতাফের কব্জা থেকে উদ্ধারে প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেছেন তিনি।
রবিবার (১ আগস্ট) মধ্য রাতে সীতাকুণ্ডের বাড়বকুণ্ডের ৩ নম্বর ওয়ার্ড মান্দারীটোলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
কৃষক রফিকুল ইসলামের অভিযোগ, উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক ও মান্দারীটোলা গ্রামের নুর সোলাইমানের ছেলে আলতাফ হোসেন রবিবার মধ্য রাতে অস্ত্রশস্ত্রসহ একদল সন্ত্রাসী নিয়ে তার কলাবাগান কেটে ফেলে৷ পরে বাঁশের বেড়া দিয়ে সীমানা প্রাচীর নির্মাণের মাধ্যমে জায়গাটি তার দখলে নেয়। এতে তার এক লক্ষ টাকার বাগানের ক্ষতি হয়।
রফিকুল ইসলাম আরও বলেন, বাড়বকুণ্ডের মক্ষম নগর মৌজার বিএস খতিয়ান নং-২৪৯ ও দাগ নং ৪৫২ এর ১৭ শতক জমি ৪০ বছর ধরে ভোগ দখলে আছেন তিনি। যা তিনি তফসীলভুক্ত সম্পত্তি হিসেবে ক্রয় করেন। জমির ক্রয় সংক্রান্ত তার মূল দলিল রয়েছে। কিন্তুু তিনি ক্রয়কৃত সম্পত্তি নিজ নামে নামজারী করেননি। এই সুযোগে আলতাফ হোসেন জায়গাটি দখল করেন৷
তিনি আরও বলেন, ১৯৭৮ সালের ২৪ মার্চ নুর সোলাইমান মোছাম্মৎ নুর নাহারের কাছে ১৭ শতক জমি ১৩৮৯ দলিলমূলে বিক্রয় করেন। এরপর ১৯৭৯ সালে ৫৩০১ দলিলমূলে ছেরাজুল হকের কাছে নুর নাহার বেগম জমিটি পুনরায় বিক্রয় করেন৷ আবার ১৯৮৬ সালের ২৮ মে ২৭৮৭ সাফ কবলা দলিলমূলে তিনি জমিটি ক্রয় করেন ছেরাজুল হকের কাছ থেকে। সেই অবধি তিনি ভোগদখলে স্থিত আছেন।
রফিকুল ইসলাম আরও বলেন, এ সংক্রান্ত নামজারি আবেদন করলে নুর সোলাইমানের ছেলে আলতাফ হোসেন আপত্তি জানান। পরে আবার তা প্রত্যাহারও করে নেন৷ পরে অপকৌশলে অসাধুদের মাধ্যমে নুর সোলাইমান ১৭ শতক জমি থেকে ১০ শতক নিজের নামে নামজারী করে ফেলেন। ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার সরেজমিনে গিয়েও জায়গাটি রফিকুলের দখলে পেয়েছেন বলে জানান তিনি।
এদিকে মঙ্গলবার বেলা এগারোটায় বাড়বকুণ্ড বাজারে মানববন্ধন করে রফিকুল ইসলাম ও তার পরিবারের সদস্যরা। এসময় তারা আলতাফ হোসেনকে ভূমিদস্য হিসেবে উল্লেখ করে বাজারে বিক্ষোভ করে। তারা আলতাফের দখল থেকে জায়গাটি উদ্ধার ও কলাবাগানের ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন।
রফিকুলের ছেলে সাইফুল ইসলাম বলেন, আমার বাবা প্রায় এক লক্ষ টাকা খরচ করে কলাবাগান করে। কিন্তুু আলতাফ হোসেন তার দলবল নিয়ে সব কলা গাছ কেটে ফেলে৷ তিনি একজন সরকারি কর্মকর্তা হওয়ার পরও উগ্রবাদী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হন। যা সরকারি চাকরী বিধির লঙ্ঘন। সাইফুল আরও অভিযোগ করেন, আলতাফ হোসেন সরকারি চাকরী করেও রাজনীতিতে যুক্ত। তিনি স্বেচ্ছাসেবক লীগের ওয়ার্ড সেক্রেটারি হয়ে এলাকায় প্রভাব বিস্তার করতেন। সাম্প্রতিক সময়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের বিরুদ্ধেও তিনি নানারকম মন্তব্য করেন এবং যুবলীগের হামলায় সাথে যোগ দেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আলতাফ হোসেন বলেন, এসব মিথ্যা অভিযোগ। আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে এবং আমাকে ফাঁসাতেই মানববন্ধন ও অভিযোগ এসব করা হচ্ছে। আমার বাবার নামে নামজারী করা আছে ওই জমি। আমাদের জায়গা আমরা দখল করেছি। অন্যের জমি দখলে আমি জড়িত নয়।