চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা এক গৃহবধূকে পরিকল্পিতভাবে খুন করে ‘অগ্নিকাণ্ড’র নাটক সাজিয়েছে শ্বশুরবাড়ির লোকজন। এ ঘটনায় নিহতের স্বামী, ভাসুর ও ভাসুরের স্ত্রীকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তবে নিহতের স্বামী জন্ম থেকে মানসিক প্রতিবন্ধী বলে জানা গেছে।
বুধবার (২৪ মে) বিকেলে উপজেলার বাশঁবাড়িয়া ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড জোরবটতল এলাকার মুনসুর আহমদের নতুন বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ওই গৃহবধূর নাম রোকসানা আক্তার (২০)। তিনি একই বাড়ির আনোয়ার কিবরিয়ার স্ত্রী।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বিকেল ৪টার দিকে হঠাৎ আগুন আগুন বলে চিৎকার করতে থাকেন আনোয়ার কিবরিয়ার বড় ভাই মোস্তফা ও তার স্ত্রী। এসময় আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে পানি মেরে আগুন নিভালে শোবার ঘরে গৃহবধূ রোকসানা আক্তারের পুড়ে যাওয়া লাশ দেখতে পান। এরপর খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছায়। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করার সময় লাশের মাথার পিছনে ধারালো অস্ত্রের কোপ ও তাজা রক্ত দেখতে পায়।
স্থানীয় ইউপি মেম্বার মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, ‘নিহতের স্বামী জন্ম থেকে কিছুটা মানসিক প্রতিবন্ধী। একবার ঘুমালে ৮ থেকে ১৫ দিন পর্যন্ত টানা ঘুমান তিনি। এক বছর আগে বিয়ে করার পর থেকে অনেকটা সুস্থ হয়ে যান তিনি। তবে তিনি ঘটনার সময় ঘরে ছিলেন না। তার বড় ভাই মোস্তফা ও তার স্ত্রী ঘরে ছিলেন। সম্পত্তির লোভে বা অন্য কোন কারণে ভাই-ভাবী এই ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারে।’
সীতাকুণ্ড মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। কুপিয়ে হত্যা করে বিছানায় মরদেহ রাখা হয়েছে এবং হাঁটু থেকে মাথা পর্যন্ত লেপ জাতীয় মোটা কাপড় দিয়ে ঢেকে কোন দাহ্য পদার্থ দিয়ে আগুন লাগানো হয়েছে। তারা প্রথমে এটিকে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিটের আগুন বলে প্রচারের চেষ্টা করেন। তবে ঘটনার আলামতে আমার সন্দেহ হয়। পরবর্তীতে সুরতহাল করার সময় লাশের মাথার পিছনে ধারালো বস্তুর আঘাতে অন্তত ৩ ইঞ্চি গভীর দু’টি ক্ষত চিহ্ন পাওয়া যায়। তখন আমি নিশ্চিত হই; এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহতের স্বামী, ভাসুর ও ভাসুরের স্ত্রীকে থানায় আনা হয়েছে।