সারা দেশের মত চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারীতেও বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের অন্যতম পবিত্র ধর্মীয় উৎসব শুভ মধু পূর্ণিমা মহাসমারোহে গত বৃহস্পতিবার দিনব্যাপী নানা কর্মসূচির মাধ্যমে উদযাপন করা হয়েছে।
বৌদ্ধ ধর্মের প্রবক্তা মহাকারুনিক গৌতম বুদ্ধ জীবিতকালে বৌদ্ধ ভিক্ষুগন তুচ্ছ একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে দ্বিধা বিভক্ত হয়ে পড়ে। এই বিভক্তির ঘটনায় তিনি (গৌতম বুদ্ধ) মনে দুঃখ পেয়ে পারলেয্য নামে একটি বনে চলে যায়। সেখানে তিনি সাধনায় রত হয়ে পড়েন। বুদ্ধের এই অবস্থা দেখে তির্যক প্রানী বানর তাঁকে মধু দান দিয়ে আপ্যায়ন করেন। সেই বনে হস্তিরাজ বুদ্ধকে সেবা করেন। তির্যক প্রানী বানর কর্তৃক বুদ্ধকে মধু দানের স্মৃতির ঘটনার পর থেকেই এই মধু পূর্ণিমা তথা ভাদ্র পূর্ণিমার প্রবর্তন হয়। এই ধর্মীয় উৎসব মহাসমারোহে ভাবগম্ভীর পরিবেশে উদযাপনের জন্য চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার আওতাধীন আটটি বৌদ্ধ জনগোষ্ঠী অধ্যূষিত ১২ টি বৌদ্ধ বিহার তথা মন্দিরে দিনব্যাপী বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহন করা হয়। কর্মসূচির মধ্যে ছিল ভোরে পবিত্র ত্রিপিটকের মঙ্গলবানী পাঠ, সমবেত বুদ্ধ বন্দনা, জাতীয়,ধর্মীয় ও স্ব স্ব সংগঠনের পতাকা উত্তোলন, বুদ্ধ পূজা, পঞ্চশীল ও উপসথ শীল গ্রহন, ভিক্ষু সংঘের পিন্ডদান, উপসথ শীলধারীদের মধ্যহৃভোজ গ্রহন, মধু পূর্ণিমার তাৎপর্য শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান, আলোক সজ্জা, বুদ্ধ কীর্তন, সন্ধ্যা কালীন প্রদীপ পূজা, দেশের শান্তি ও সমৃদ্ধি এবং জীব জগতের মঙ্গল কামনায় সমবেত প্রার্থনা। উপজেলা আওতাধীন পশ্চিম ধলই উদালিয়া শান্তি নিকেতন বৌদ্ধ বিহার, মির্জাপুর শান্তিধাম বিহার, মির্জাপুর গৌতমাশ্রম বিহার, বালুখালী জগৎ জোতি বৌদ্ধ বিহার, গুমানমর্দ্দন ধর্মচক্র বিহার, আরিয়া ওয়াংচা আন্তর্জাতিক বিদর্শন ভাবনা কেন্দ্র, গুমানমর্দ্দন সার্বজনীন নালন্দা বিহার,গুমানমর্দ্দন শান্তি বিহার, রুদ্রপুর ধর্মরত্ন বিহার, মীরেরখীল চন্দ্রপুর বেনুবন বিহার, জোবরা সুগত বিহার, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন বিশ্ব শান্তি প্যাগোডা, মধ্যম মার্দাশা সার্বজনীন শান্তি নিকেতন বৌদ্ধ বিহারে শুভ মধু পূর্ণিমা উপলক্ষে আয়োজিত ধর্মীয় আলোচনা সভায় স্ব স্ব বিহারের অধ্যক্ষগন সভাপতিত্ব করেন।