চট্টগ্রাম 12:25 am, Friday, 27 June 2025

মিরসরাইয়ে বৃদ্ধকে কুপিয়ে হত্যা, পুলিশের ধারণা পারিবারিক হত্যাকাণ্ড

চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার ১ নং করেরহাট ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড বদ্ধ ভবানীতে হাত পা বাঁধা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) ভোরে হাত পা বাঁধা রক্তাক্ত অবস্থায় বৃদ্ধের লাশ দেখতে পায় তার স্ত্রী ফিরোজা। পরে স্থানীয় বিজিবি ক্যাম্প ও প্রতিবেশীদের ডাকলে সবাই এসে হাত-পা বাঁধা রক্তাক্ত লাশ দেখতে পেয়ে থানা পুলিশকে জানান। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন মিরসরাই সার্কেল (এএসপি) নোমান আহমেদ, জোরারগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হালিম সহ সঙ্গীয় ফোর্স।

‎জানা গেছে, বদ্ধ ভবানী বিজিবি ক্যাম্পের সামনে ৮৫ বছর বয়সী বৃদ্ধ ফয়েজ আহমেদ তার ৪র্থ স্ত্রী ফিরোজাকে নিয়ে বসবাস করেন। তিনি মোট ৪ টি বিয়ে করেন। আগের স্ত্রীদের মোট ৮ সন্তান রয়েছে। তারা সবাই আলাদা আলাদা থাকে‌। ঘটনার দিন রাতে নিহত ফয়েজ আহমেদ বাড়িতে একা ছিলেন। তার স্ত্রী ফিরোজা ও শালিকা ছেমনা পাশের বাড়িতে ছিলেন। ফিরোজা এলাকায় ধাত্রী হিসেবে পরিচিত।

‎সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঘরের মেঝেতে রক্তের দাগ ও বিছানা উল্টানো। আলমারিতে ছিল তার জায়গা জমির কাগজপত্র। খাটের পাশে একটি টেবিল বক্সে ছিল কিছু কাগজপত্র। সবগুলো এলোমেলো হয়ে আছে। জায়গা জমির কাগজপত্র দুই ছেলে তাদের কাছে রেখেছে বলে জানান।

‎নিহতের স্ত্রী ফিরোজা জানান, আমি ধাত্রী হিসেবে পাশের বাড়িতে একটি মহিলার প্রসব বেদনা উঠলে ঐ বাড়িতে যাই। রাত ১২ টায় আমি এবং আমার বোন ছেমনা ঐ বাড়িতে যাই‌। ফজরের আজান দিলে বাড়িতে আসি দেখি আমার স্বামীর হাত পা বাঁধা রক্তাক্ত অবস্থায়। এরপর আমি পাশে বিজিবি ক্যাম্পে জানাই, আশেপাশের লোকজনকে ডেকে আনি। আমি ভাবছিলাম অজ্ঞান হয়ে পড়ে আছে। পরে দেখতেছি উনি আর পৃথিবীতে নাই।

‎নিহত ফয়েজ আহমদের প্রথম স্ত্রীর সন্তান শাহ আলম দ্বিতীয় স্ত্রীর ছেলে আলমগীর হোসেন জানান, গত দেড় মাস যাবত আমার বাবার চতুর্থ স্ত্রী ও তার বোন ছেমনা এ বাড়িতে বসবাস করে আসছে। গতকাল রাতে তারা বাড়িতে না থাকলে বাড়িতে ঢুকে কে বা কারা আমার বাবাকে মেরে ফেলে। আমরা এই হত্যার বিচার চাই।

‎জোরারগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হালিম বলেন, খুনের বিষয়ে জানতে পেরে আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। সুরতহাল রিপোর্ট নেয়া হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মর্গে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত করে ঘটনার বিস্তারিত বলতে পারব। তবে এটি পারিবারিক হত্যাকাণ্ড বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা যাচ্ছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

সীতাকুণ্ড কলেজ ছাত্রদলের উদ্যোগে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ

মিরসরাইয়ে বৃদ্ধকে কুপিয়ে হত্যা, পুলিশের ধারণা পারিবারিক হত্যাকাণ্ড

Update Time : 09:15:54 pm, Thursday, 26 June 2025

চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার ১ নং করেরহাট ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড বদ্ধ ভবানীতে হাত পা বাঁধা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) ভোরে হাত পা বাঁধা রক্তাক্ত অবস্থায় বৃদ্ধের লাশ দেখতে পায় তার স্ত্রী ফিরোজা। পরে স্থানীয় বিজিবি ক্যাম্প ও প্রতিবেশীদের ডাকলে সবাই এসে হাত-পা বাঁধা রক্তাক্ত লাশ দেখতে পেয়ে থানা পুলিশকে জানান। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন মিরসরাই সার্কেল (এএসপি) নোমান আহমেদ, জোরারগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হালিম সহ সঙ্গীয় ফোর্স।

‎জানা গেছে, বদ্ধ ভবানী বিজিবি ক্যাম্পের সামনে ৮৫ বছর বয়সী বৃদ্ধ ফয়েজ আহমেদ তার ৪র্থ স্ত্রী ফিরোজাকে নিয়ে বসবাস করেন। তিনি মোট ৪ টি বিয়ে করেন। আগের স্ত্রীদের মোট ৮ সন্তান রয়েছে। তারা সবাই আলাদা আলাদা থাকে‌। ঘটনার দিন রাতে নিহত ফয়েজ আহমেদ বাড়িতে একা ছিলেন। তার স্ত্রী ফিরোজা ও শালিকা ছেমনা পাশের বাড়িতে ছিলেন। ফিরোজা এলাকায় ধাত্রী হিসেবে পরিচিত।

‎সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঘরের মেঝেতে রক্তের দাগ ও বিছানা উল্টানো। আলমারিতে ছিল তার জায়গা জমির কাগজপত্র। খাটের পাশে একটি টেবিল বক্সে ছিল কিছু কাগজপত্র। সবগুলো এলোমেলো হয়ে আছে। জায়গা জমির কাগজপত্র দুই ছেলে তাদের কাছে রেখেছে বলে জানান।

‎নিহতের স্ত্রী ফিরোজা জানান, আমি ধাত্রী হিসেবে পাশের বাড়িতে একটি মহিলার প্রসব বেদনা উঠলে ঐ বাড়িতে যাই। রাত ১২ টায় আমি এবং আমার বোন ছেমনা ঐ বাড়িতে যাই‌। ফজরের আজান দিলে বাড়িতে আসি দেখি আমার স্বামীর হাত পা বাঁধা রক্তাক্ত অবস্থায়। এরপর আমি পাশে বিজিবি ক্যাম্পে জানাই, আশেপাশের লোকজনকে ডেকে আনি। আমি ভাবছিলাম অজ্ঞান হয়ে পড়ে আছে। পরে দেখতেছি উনি আর পৃথিবীতে নাই।

‎নিহত ফয়েজ আহমদের প্রথম স্ত্রীর সন্তান শাহ আলম দ্বিতীয় স্ত্রীর ছেলে আলমগীর হোসেন জানান, গত দেড় মাস যাবত আমার বাবার চতুর্থ স্ত্রী ও তার বোন ছেমনা এ বাড়িতে বসবাস করে আসছে। গতকাল রাতে তারা বাড়িতে না থাকলে বাড়িতে ঢুকে কে বা কারা আমার বাবাকে মেরে ফেলে। আমরা এই হত্যার বিচার চাই।

‎জোরারগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হালিম বলেন, খুনের বিষয়ে জানতে পেরে আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। সুরতহাল রিপোর্ট নেয়া হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মর্গে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত করে ঘটনার বিস্তারিত বলতে পারব। তবে এটি পারিবারিক হত্যাকাণ্ড বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা যাচ্ছে।