চট্টগ্রাম 9:44 pm, Friday, 27 June 2025

হাটহাজারীতে গ্রাম আদালতের প্রচার প্রচারণা বিষয়ক সভা

হাটহাজারী উপজেলার ৩নং মির্জাপুর ইউনিয়নে গ্রাম আদালত বিষয়ক কমিউনিটি মতবিনিময় সভা ও ভিডিও প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সোমবার (১৭ মার্চ) উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়ন পরিষদের সম্মেলন কক্ষে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণে ইউপি মেম্বার ও চেয়ারম্যানদের ভূমিকা শীর্ষক এই ভিডিও প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়।

জানা যায়,গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন ও ইউএনডিপি বাংলাদেশ এর সহযোগিতায় স্থানীয় সরকার বিভাগ কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন বাংলাদেশে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ (৩য় পর্যায় ) প্রকল্প এর আওতায় এ কার্যক্রম সম্পন্ন হয়। স্থানীয় ছোট খাটো দেওয়ানী ও ফোজদারি বিরোধ ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে নিস্পত্তির লক্ষ্যে সরকার ২০০৬ সালে গ্রাম আদালত আইন প্রণয়ণ করেন । ২০২৪ সালে এ আইনটি সংশোধন করা হয় এবং ২০১৬ সালে গ্রাম আদালত বিধিমালা  প্রণয়ন করা হয়েছে।

আইন ও বিধিমালা  অনুযায়ী গ্রামীণ ছোট খাট দেওয়ানী ও ফৌজদারী বিরোধ বিবাদ স্থানীয় ভাবে নিষ্পত্তির অন্যতম বিচারিক কাঠামো গ্রাম আদালত। গ্রাম আদালতের সেবা প্রার্থীদের বিশেষত নারী এবং পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর প্রতি সংবেদনশীল হয়ে তাদের সুবিচার পাওয়ার ক্ষেত্রে গ্রা ইউপি সদস্যদের ভূমিকা রয়েছে। এছাড়াও সমন বিতরণ এজলাস কক্ষের নিরাপত্তা, বিচারক ও বিচার প্রার্থীদের নিরাপত্তা বিধানে সহায়ক ভূমিকা পালন করেন গ্রাম পুলিশগণ। আদালতে প্রতিটি মামলার বিচারিক প্রক্রিয়ার শুরু হতে নিস্পত্তি পর্যন্ত প্রতিটি ধাপের জন্য গ্রাম আদালত বিধিমালা ২০১৬ অনুযায়ী ফরমস ও রেজিস্টার এর মাধ্যমে যথাযথ  প্রক্রিয়ায় নথিপত্র প্রস্তুত ও সংরক্ষণ করা আবশ্যক।

গ্রামীন জনগণের দৌড় গৌড়ায় বিচারিক সেবা পৌঁছে দেয়ার পাশাপাশি স্বচ্ছতার সাথে ন্যায় বিচার ও ন্যায্য বিচার নিশ্চিত করার অনন্য ও গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত গ্রাম আদালতের ডকুমেন্টেশন প্রক্রিয়া। গ্রামের সাধারণ দরিদ্র জনগোষ্ঠি নামমাত্র ফিস দিয়ে(দেওয়ানী মামলার ফিস ২০টাকা,ফৌজদারী মামলার ফিস ১০ টাকা) কম সময়ে, কম খরচে গ্রাম আদালতের মাধ্যমে বিচারিক সেবা নিয়ে উপকৃত হবার সুযোগ রয়েছে। ফলে স্থানীয় বিরোধ সমূহ নিয়ে জেলা আদালতে জনগণকে দৌঁড়াতে হবে না। হতে হবে না কোন রকমের হয়রানির শিকার। এতে করে জনসাধারণ যেমন স্বাচ্ছন্দে বিচারিক সেবা পাবেন তেমনি উচ্চ আদালতে মামলার জট কমানোর ক্ষেত্রে ও ভূমিকা রাখবে গ্রাম আদালত । কিন্তু গ্রাম আদালত আইন, বিধিমালা এবং এ আদালতের সেবা সম্পর্কে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, সদস্য, সচিব ও গ্রামীন সাধারণ জনগণ সচেতন নয়। ফলে এলাকার জনগণ যেমন যথাযত সেবা পাচ্ছেন না তেমনি ইউনিয়ন পরিষদ ও যথাযথ ভূমিকা নিশ্চিত করতে পারছেন না। এ বিষয়ে ব্যাপক সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে স্থানীয় পর্যায়ে কাজ করার দায়িত্ব রয়েছে ইউপি সদস্যদের। স্থানীয় সরকার বিভাগ কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন বাংলাদেশে গ্রাম আদলত সক্রিয় করণ (তৃতীয় পর্যায় ) প্রকল্প বাস্তবায়ন সহযোগি সংস্থা হিসেবে কাজ করছে ইপসা (ইয়ং পাওয়ার ইন সোশ্যাল এ্যাকশন।

গ্রাম আদালতের এখতিয়ার, গ্রাম আদালতে পরিচালনার ক্ষেত্রে গ্রাম প্রশাসনিক কর্মকর্তার দায়িত্ব, গ্রাম আদালত সম্পর্কে জনসাধারণকে অবহিত করা, নারী এবং পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর প্রতি সংবেদনশীল হয়ে তাদের সুবিচার বৃদ্ধি করা, গ্রাম আদালতের মামলার ফিস, ছোটখাট বিরোধে জনসাধারণকে গ্রাম আদালতের মাধ্যমে সুবিচার নিশ্চিত করার বিষয়গুলো দেখানো হয়।

অত্র ইউনিয়ন পরিষদে আয়োজিত মতবিনিময় সভা ও ভিডিও প্রদর্শনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন  মোহাম্মদ বাদশা আলম ও বিশেষ অতিথি ছিলেন হাটহাজারী প্রেস ক্লাব সভাপতি কেশব কুমার বড়ুয়া। এছাড়াও অত্র ইউনিয়নের প্রশাসনিক কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম, কানু কুমার নাথ, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান, মো.জাকির হোসেন  অত্র ইউনিয়নের সদস্যবৃন্দ, নারী ও শিক্ষার্থীবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন। ##

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

হাটহাজারীতে মন্দির ধ্বংসকারী ও নামধারী সেবায়তকে গ্রেফতারের দাবিতে মানববন্ধন

হাটহাজারীতে গ্রাম আদালতের প্রচার প্রচারণা বিষয়ক সভা

Update Time : 09:02:10 pm, Monday, 17 March 2025

হাটহাজারী উপজেলার ৩নং মির্জাপুর ইউনিয়নে গ্রাম আদালত বিষয়ক কমিউনিটি মতবিনিময় সভা ও ভিডিও প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সোমবার (১৭ মার্চ) উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়ন পরিষদের সম্মেলন কক্ষে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণে ইউপি মেম্বার ও চেয়ারম্যানদের ভূমিকা শীর্ষক এই ভিডিও প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়।

জানা যায়,গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন ও ইউএনডিপি বাংলাদেশ এর সহযোগিতায় স্থানীয় সরকার বিভাগ কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন বাংলাদেশে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ (৩য় পর্যায় ) প্রকল্প এর আওতায় এ কার্যক্রম সম্পন্ন হয়। স্থানীয় ছোট খাটো দেওয়ানী ও ফোজদারি বিরোধ ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে নিস্পত্তির লক্ষ্যে সরকার ২০০৬ সালে গ্রাম আদালত আইন প্রণয়ণ করেন । ২০২৪ সালে এ আইনটি সংশোধন করা হয় এবং ২০১৬ সালে গ্রাম আদালত বিধিমালা  প্রণয়ন করা হয়েছে।

আইন ও বিধিমালা  অনুযায়ী গ্রামীণ ছোট খাট দেওয়ানী ও ফৌজদারী বিরোধ বিবাদ স্থানীয় ভাবে নিষ্পত্তির অন্যতম বিচারিক কাঠামো গ্রাম আদালত। গ্রাম আদালতের সেবা প্রার্থীদের বিশেষত নারী এবং পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর প্রতি সংবেদনশীল হয়ে তাদের সুবিচার পাওয়ার ক্ষেত্রে গ্রা ইউপি সদস্যদের ভূমিকা রয়েছে। এছাড়াও সমন বিতরণ এজলাস কক্ষের নিরাপত্তা, বিচারক ও বিচার প্রার্থীদের নিরাপত্তা বিধানে সহায়ক ভূমিকা পালন করেন গ্রাম পুলিশগণ। আদালতে প্রতিটি মামলার বিচারিক প্রক্রিয়ার শুরু হতে নিস্পত্তি পর্যন্ত প্রতিটি ধাপের জন্য গ্রাম আদালত বিধিমালা ২০১৬ অনুযায়ী ফরমস ও রেজিস্টার এর মাধ্যমে যথাযথ  প্রক্রিয়ায় নথিপত্র প্রস্তুত ও সংরক্ষণ করা আবশ্যক।

গ্রামীন জনগণের দৌড় গৌড়ায় বিচারিক সেবা পৌঁছে দেয়ার পাশাপাশি স্বচ্ছতার সাথে ন্যায় বিচার ও ন্যায্য বিচার নিশ্চিত করার অনন্য ও গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত গ্রাম আদালতের ডকুমেন্টেশন প্রক্রিয়া। গ্রামের সাধারণ দরিদ্র জনগোষ্ঠি নামমাত্র ফিস দিয়ে(দেওয়ানী মামলার ফিস ২০টাকা,ফৌজদারী মামলার ফিস ১০ টাকা) কম সময়ে, কম খরচে গ্রাম আদালতের মাধ্যমে বিচারিক সেবা নিয়ে উপকৃত হবার সুযোগ রয়েছে। ফলে স্থানীয় বিরোধ সমূহ নিয়ে জেলা আদালতে জনগণকে দৌঁড়াতে হবে না। হতে হবে না কোন রকমের হয়রানির শিকার। এতে করে জনসাধারণ যেমন স্বাচ্ছন্দে বিচারিক সেবা পাবেন তেমনি উচ্চ আদালতে মামলার জট কমানোর ক্ষেত্রে ও ভূমিকা রাখবে গ্রাম আদালত । কিন্তু গ্রাম আদালত আইন, বিধিমালা এবং এ আদালতের সেবা সম্পর্কে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, সদস্য, সচিব ও গ্রামীন সাধারণ জনগণ সচেতন নয়। ফলে এলাকার জনগণ যেমন যথাযত সেবা পাচ্ছেন না তেমনি ইউনিয়ন পরিষদ ও যথাযথ ভূমিকা নিশ্চিত করতে পারছেন না। এ বিষয়ে ব্যাপক সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে স্থানীয় পর্যায়ে কাজ করার দায়িত্ব রয়েছে ইউপি সদস্যদের। স্থানীয় সরকার বিভাগ কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন বাংলাদেশে গ্রাম আদলত সক্রিয় করণ (তৃতীয় পর্যায় ) প্রকল্প বাস্তবায়ন সহযোগি সংস্থা হিসেবে কাজ করছে ইপসা (ইয়ং পাওয়ার ইন সোশ্যাল এ্যাকশন।

গ্রাম আদালতের এখতিয়ার, গ্রাম আদালতে পরিচালনার ক্ষেত্রে গ্রাম প্রশাসনিক কর্মকর্তার দায়িত্ব, গ্রাম আদালত সম্পর্কে জনসাধারণকে অবহিত করা, নারী এবং পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর প্রতি সংবেদনশীল হয়ে তাদের সুবিচার বৃদ্ধি করা, গ্রাম আদালতের মামলার ফিস, ছোটখাট বিরোধে জনসাধারণকে গ্রাম আদালতের মাধ্যমে সুবিচার নিশ্চিত করার বিষয়গুলো দেখানো হয়।

অত্র ইউনিয়ন পরিষদে আয়োজিত মতবিনিময় সভা ও ভিডিও প্রদর্শনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন  মোহাম্মদ বাদশা আলম ও বিশেষ অতিথি ছিলেন হাটহাজারী প্রেস ক্লাব সভাপতি কেশব কুমার বড়ুয়া। এছাড়াও অত্র ইউনিয়নের প্রশাসনিক কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম, কানু কুমার নাথ, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান, মো.জাকির হোসেন  অত্র ইউনিয়নের সদস্যবৃন্দ, নারী ও শিক্ষার্থীবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন। ##