চট্টগ্রাম 3:02 am, Tuesday, 3 December 2024

মিরসরাইয়ে চাঁদা না পেয়ে ঠিকাদারের ভাইকে পিটিয়ে জখম, ভাংচুর ও লুটপাটের অভিযোগ

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে চাহিদামত চাদা না পেয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে ঠিকাদারের ভাইকে পিটিয়ে জখম করে দুইটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানে ব্যাপক ভাংচুর করে সেখানে থাকা নগদ অর্থ ও মুল্যবান কাগজপত্র লুটপাট করার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতা ও ইউপি সদস্য’র বিরুদ্ধে।

রবিবার ৪ঠা জুন রাত সাড়ে ৮টায় এবং রাত ১ টার সময় উপজেলার জোরারগঞ্জ থানাধীন ৬নং ইছাখালী ইউনিয়নের বঙ্গবন্ধু অথনৈতিক অঞ্চলের ভাবির দোকান এলাকায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স ভাই ভাই এন্টার প্রাইজ এবং সোহেল ট্রেডারর্স এন্ড সাপ্লাইয়ার্স নামে দুইটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানে এ ঘটনা ঘটে।

অভিযোগ রয়েছে ঘটনাস্থলের অন্তত ৩ কিলোমিটারের মধ্য অর্থনৈতিক অঞ্চলের জেলা পুলিশের একটি ফাঁড়ি রয়েছে। রাতে তাদের একটি দল অর্থনৈতিক অঞ্চলে দায়িত্ব পালন করলেও ঘটনার বিষয়ে তারা নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছেন। সোমবার সকালে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান গুলোর স্বত্ত¡াধিকারী ৭নং কাঁটাছরা ইউনিয়নের বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন সোহেল (৪০), জয়নাল আবেদীন নশা (৪২) এবং মোজাম্মেল হোসেন (৪০) উক্ত অভিযোগ করেন। এসময় তারা বলেন, সেখানে তারা বিগত ৫ বছর যাবত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তি ভিত্তিক ঠিকাদারি বিভিন্ন পণ্য সরবরাহ এবং নির্মাণ কার্যক্রম সংক্রান্ত বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করে আসছেন। সম্প্রতি তারা ইজিসিভি সোনাগাজী সোলার প্লানের পাইলিং এবং দেড় কিলোমিটার সড়কের নির্মাণ কাজ করছেন। এরমধ্য ইছাখালী ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো: আবদুস সামাদ প্রকাশ ছালেক মেম্বার (৩৫) এবং ইছাখালী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি মো: ওয়াশিম আকরাম শাকিল (২৮) বিভিন্ন সময় হুমকি ধমকি দিয়ে মোটা অংকের চাঁদা দাবি করে আসছে। এর মধ্য তারা বিষয়টি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল মোস্তফাকে জানালে তিনি কোন প্রকার সমাধান না করে উল্টো তাদেরকে ম্যানেজ করা জন্য বলেন। পরে তাদের হুমকি ধমকিতে চলতি বছরের গত ১৮ এপ্রিল নগদ ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা এবং গত ২১ মে ২ লক্ষ টাকা ছাত্রলীগ নেতা শাকিলকে দেওয়া হয়। বর্তমানে ফের তারা ১০ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করলে ঠিকাদাররা তাদের সাথে যোগাযোগ বন্ধ রাখেন। ঘটনার দিন রাতে ছাত্রলীগ নেতা শাকিলের নের্তৃত্বে ইউপি সদস্য ছালেক মেম্বার এবং জহির উদ্দিনসহ অজ্ঞাত আরো ১৫/২০ জন এসে ঠিকাদার সোহেলকে খুঁজতে থাকে। এসময় তাকে না পেয়ে ঘটনাস্থলে সোহেলের ছোট ভাই এইচএইসি পরীক্ষার্থী মো. রাকিব হোসেনকে (১৮) একা পেয়ে মারধর করে গুরুত্বর জখম করে। পরে রাত ১ টায় সময় তারা দলবল নিয়ে এসে ঠিকাদারি অফিসগুলোতে ব্যাপক ভাংচুর করে সেখানে থাকা নগদ অর্থ ও মূল্যবান কাগজপত্র নিয়ে যায়। এদিকে রাকিব মিরসরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়ে উক্ত ঘটনার আইনি প্রতিকার চেয়ে জোরারগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করে।
এ বিষয়ে জানতে চেয়ে ছাত্রলীগ নেতা শাকিলের ব্যক্তিগত মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও সেটি বন্ধ পাওয়া য়ায়।
জানতে চেয়ে ইউপি সদস্য ছালেক মেম্বারের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও সেটি ব্যস্ত পাওয়া যায়। ফলে তাদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল মোস্তাফা বলেন, চাঁদা দাবীর কোন ঘটনা আমি জানি না। তবে গতকালকে সোহেলের ভাইকে কে বা কারা মেরেছে বলে আমি শুনেছি।

এ বিষয়ে চানতে চাইলে অথনৈতিক অঞ্চল পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশ পরিদর্শক হাবিব বলেন, মারামারির ঘটনা শুনে ঘটনাস্থলে গেলে হাঙ্গামাকারীরা পালিয়ে যায়।

এ বিষয়ে জোরারগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ জাহেদ হোসেন বলেন, অর্থনৈতিক অঞ্চলের মারামারির ঘটনার একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

কাপ্তাই জামায়াতে ইসলামীর আমীর পুনঃনির্বাচিত হলেন শিক্ষাবিদ হারুনুর রশীদ

মিরসরাইয়ে চাঁদা না পেয়ে ঠিকাদারের ভাইকে পিটিয়ে জখম, ভাংচুর ও লুটপাটের অভিযোগ

Update Time : 06:35:28 pm, Monday, 5 June 2023

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে চাহিদামত চাদা না পেয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে ঠিকাদারের ভাইকে পিটিয়ে জখম করে দুইটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানে ব্যাপক ভাংচুর করে সেখানে থাকা নগদ অর্থ ও মুল্যবান কাগজপত্র লুটপাট করার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতা ও ইউপি সদস্য’র বিরুদ্ধে।

রবিবার ৪ঠা জুন রাত সাড়ে ৮টায় এবং রাত ১ টার সময় উপজেলার জোরারগঞ্জ থানাধীন ৬নং ইছাখালী ইউনিয়নের বঙ্গবন্ধু অথনৈতিক অঞ্চলের ভাবির দোকান এলাকায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স ভাই ভাই এন্টার প্রাইজ এবং সোহেল ট্রেডারর্স এন্ড সাপ্লাইয়ার্স নামে দুইটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানে এ ঘটনা ঘটে।

অভিযোগ রয়েছে ঘটনাস্থলের অন্তত ৩ কিলোমিটারের মধ্য অর্থনৈতিক অঞ্চলের জেলা পুলিশের একটি ফাঁড়ি রয়েছে। রাতে তাদের একটি দল অর্থনৈতিক অঞ্চলে দায়িত্ব পালন করলেও ঘটনার বিষয়ে তারা নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছেন। সোমবার সকালে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান গুলোর স্বত্ত¡াধিকারী ৭নং কাঁটাছরা ইউনিয়নের বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন সোহেল (৪০), জয়নাল আবেদীন নশা (৪২) এবং মোজাম্মেল হোসেন (৪০) উক্ত অভিযোগ করেন। এসময় তারা বলেন, সেখানে তারা বিগত ৫ বছর যাবত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তি ভিত্তিক ঠিকাদারি বিভিন্ন পণ্য সরবরাহ এবং নির্মাণ কার্যক্রম সংক্রান্ত বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করে আসছেন। সম্প্রতি তারা ইজিসিভি সোনাগাজী সোলার প্লানের পাইলিং এবং দেড় কিলোমিটার সড়কের নির্মাণ কাজ করছেন। এরমধ্য ইছাখালী ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো: আবদুস সামাদ প্রকাশ ছালেক মেম্বার (৩৫) এবং ইছাখালী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি মো: ওয়াশিম আকরাম শাকিল (২৮) বিভিন্ন সময় হুমকি ধমকি দিয়ে মোটা অংকের চাঁদা দাবি করে আসছে। এর মধ্য তারা বিষয়টি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল মোস্তফাকে জানালে তিনি কোন প্রকার সমাধান না করে উল্টো তাদেরকে ম্যানেজ করা জন্য বলেন। পরে তাদের হুমকি ধমকিতে চলতি বছরের গত ১৮ এপ্রিল নগদ ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা এবং গত ২১ মে ২ লক্ষ টাকা ছাত্রলীগ নেতা শাকিলকে দেওয়া হয়। বর্তমানে ফের তারা ১০ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করলে ঠিকাদাররা তাদের সাথে যোগাযোগ বন্ধ রাখেন। ঘটনার দিন রাতে ছাত্রলীগ নেতা শাকিলের নের্তৃত্বে ইউপি সদস্য ছালেক মেম্বার এবং জহির উদ্দিনসহ অজ্ঞাত আরো ১৫/২০ জন এসে ঠিকাদার সোহেলকে খুঁজতে থাকে। এসময় তাকে না পেয়ে ঘটনাস্থলে সোহেলের ছোট ভাই এইচএইসি পরীক্ষার্থী মো. রাকিব হোসেনকে (১৮) একা পেয়ে মারধর করে গুরুত্বর জখম করে। পরে রাত ১ টায় সময় তারা দলবল নিয়ে এসে ঠিকাদারি অফিসগুলোতে ব্যাপক ভাংচুর করে সেখানে থাকা নগদ অর্থ ও মূল্যবান কাগজপত্র নিয়ে যায়। এদিকে রাকিব মিরসরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়ে উক্ত ঘটনার আইনি প্রতিকার চেয়ে জোরারগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করে।
এ বিষয়ে জানতে চেয়ে ছাত্রলীগ নেতা শাকিলের ব্যক্তিগত মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও সেটি বন্ধ পাওয়া য়ায়।
জানতে চেয়ে ইউপি সদস্য ছালেক মেম্বারের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও সেটি ব্যস্ত পাওয়া যায়। ফলে তাদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল মোস্তাফা বলেন, চাঁদা দাবীর কোন ঘটনা আমি জানি না। তবে গতকালকে সোহেলের ভাইকে কে বা কারা মেরেছে বলে আমি শুনেছি।

এ বিষয়ে চানতে চাইলে অথনৈতিক অঞ্চল পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশ পরিদর্শক হাবিব বলেন, মারামারির ঘটনা শুনে ঘটনাস্থলে গেলে হাঙ্গামাকারীরা পালিয়ে যায়।

এ বিষয়ে জোরারগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ জাহেদ হোসেন বলেন, অর্থনৈতিক অঞ্চলের মারামারির ঘটনার একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।