চট্টগ্রাম 10:45 pm, Saturday, 21 June 2025

সীতাকুণ্ডে গৃহবধূকে পুড়িয়ে হত্যা, মামলা না নেওয়ার অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে

সীতাকুণ্ডে ফাতেমা আক্তার (২৬) নামে এক গৃহবধূকে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ ওঠেছে স্বামী-শাশুড়ীর বিরুদ্ধে। এঘটনায় গৃহবধূ ফাতেমা আক্তারের পিতা নুরুল আবসার সীতাকুণ্ড মডেল থানায় মামলা দায়ের করতে গেলে পুলিশ মামলা নেয়নি বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীর পরিবার।

বুধবার (১৮ জুন) চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। চমেক হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ নুরুল আলম আশেক মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

ফাতেমা আক্তার উপজেলার ১নং সৈয়দপুর ইউনিয়নের উত্তর বগাচতর গ্রামের মোঃ মুসলিমের স্ত্রী এবং মিরসরাই উপজেলার জোরারগঞ্জ থানার দক্ষিণ সোনাপাহাড় গ্রামের নুরুল আবসারের মেয়ে।

জানা যায়, গত শনিবার (১৪ জুন) সকালে শ্বশুর বাড়ীতে স্বামীর অত্যাচার সইতে না পেরে ক্ষোভে ওই গৃহবধূ নিজের শরীরে আগুন দেয় মর্মে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। তার শরীরের ৫৫ শতাংশ দগ্ধ ছিল। পাঁচদিন পর ফাতেমা আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার রাত ১১টার সময় মারা যান। তিন সন্তানের জননী ফাতেমা আক্তারের বিয়ে হয় ১৮ বছর আগে। স্বামী মুসলিম উদ্দিন ব্যাটারী চালিত রিক্সা চালাক বলে জানা গেছে।

ফাতেমার চাচাতো ভাই গিয়াস উদ্দিন বলেন, ফাতেমার মৃত্যুর পর রাতে আমরা সীতাকুণ্ড থানায় গিয়েছি। ভোর পর্যন্ত সেখানে আমরা ছিলাম। কিন্তু পুলিশ মামলা নেয়নি।

নিহত গৃহবধূ ফাতেমা আক্তারের ফুফাতো বোন মাসুমা আক্তার বলেন, বিয়ের পর থেকেই আমার বোনকে নির্যাতন করতো স্বামী-শাশুড়ি। এ নিয়ে বহুবার শালিশ দরবারও হয়েছে। গত শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার সময় স্বামী-শাশুড়ি মিলে আমার বোনের চুলে আগুন ধরিয়ে দিয়ে বাহির থেকে দরজা বন্ধ করে দেয়। তার চিৎকারের আশপাশের লোকজন তাকে উদ্ধার করে চমেক হাসপাতালে ভর্তি করে। মৃত্যুর পর স্বামী-শাশুড়ী পালিয়ে যায়। আমার মামা থানায় মামলা করতে গেলেও পুলিশ মামলা নেয়নি।

মামলা না নেওয়ার বিষয়টি জানতে চাইলে সীতাকুণ্ড মডেল থানার ওসি মজিবুর রহমান বলেন, মামলা করতে কেউ থানায় আসেনি। আসলে মামলা নেওয়া হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

সীতাকুণ্ডে ১৫ বছর ধরে বিদ্যুৎ চুরি করছিল আ. লীগ নেতা, হাতেনাতে ধরলো পিডিবি

সীতাকুণ্ডে গৃহবধূকে পুড়িয়ে হত্যা, মামলা না নেওয়ার অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে

Update Time : 06:41:46 pm, Saturday, 21 June 2025

সীতাকুণ্ডে ফাতেমা আক্তার (২৬) নামে এক গৃহবধূকে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ ওঠেছে স্বামী-শাশুড়ীর বিরুদ্ধে। এঘটনায় গৃহবধূ ফাতেমা আক্তারের পিতা নুরুল আবসার সীতাকুণ্ড মডেল থানায় মামলা দায়ের করতে গেলে পুলিশ মামলা নেয়নি বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীর পরিবার।

বুধবার (১৮ জুন) চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। চমেক হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ নুরুল আলম আশেক মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

ফাতেমা আক্তার উপজেলার ১নং সৈয়দপুর ইউনিয়নের উত্তর বগাচতর গ্রামের মোঃ মুসলিমের স্ত্রী এবং মিরসরাই উপজেলার জোরারগঞ্জ থানার দক্ষিণ সোনাপাহাড় গ্রামের নুরুল আবসারের মেয়ে।

জানা যায়, গত শনিবার (১৪ জুন) সকালে শ্বশুর বাড়ীতে স্বামীর অত্যাচার সইতে না পেরে ক্ষোভে ওই গৃহবধূ নিজের শরীরে আগুন দেয় মর্মে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। তার শরীরের ৫৫ শতাংশ দগ্ধ ছিল। পাঁচদিন পর ফাতেমা আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার রাত ১১টার সময় মারা যান। তিন সন্তানের জননী ফাতেমা আক্তারের বিয়ে হয় ১৮ বছর আগে। স্বামী মুসলিম উদ্দিন ব্যাটারী চালিত রিক্সা চালাক বলে জানা গেছে।

ফাতেমার চাচাতো ভাই গিয়াস উদ্দিন বলেন, ফাতেমার মৃত্যুর পর রাতে আমরা সীতাকুণ্ড থানায় গিয়েছি। ভোর পর্যন্ত সেখানে আমরা ছিলাম। কিন্তু পুলিশ মামলা নেয়নি।

নিহত গৃহবধূ ফাতেমা আক্তারের ফুফাতো বোন মাসুমা আক্তার বলেন, বিয়ের পর থেকেই আমার বোনকে নির্যাতন করতো স্বামী-শাশুড়ি। এ নিয়ে বহুবার শালিশ দরবারও হয়েছে। গত শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার সময় স্বামী-শাশুড়ি মিলে আমার বোনের চুলে আগুন ধরিয়ে দিয়ে বাহির থেকে দরজা বন্ধ করে দেয়। তার চিৎকারের আশপাশের লোকজন তাকে উদ্ধার করে চমেক হাসপাতালে ভর্তি করে। মৃত্যুর পর স্বামী-শাশুড়ী পালিয়ে যায়। আমার মামা থানায় মামলা করতে গেলেও পুলিশ মামলা নেয়নি।

মামলা না নেওয়ার বিষয়টি জানতে চাইলে সীতাকুণ্ড মডেল থানার ওসি মজিবুর রহমান বলেন, মামলা করতে কেউ থানায় আসেনি। আসলে মামলা নেওয়া হবে।