চট্টগ্রাম 11:14 pm, Monday, 30 June 2025

নবাবগঞ্জে শ্রেণিকক্ষের অভাবে খোলা আকাশের নিচে পাঠদান

ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার নয়নশ্রী ইউনিয়নের খানেপুর ইসলামী ইবতেদায়ী মাদ্রাসায় শ্রেণিকক্ষ সংকটে চলছে। তাই বাধ্য হয়ে খোলা আকাশের নিচে চলছে কোমলমতি শিশুদের পাঠদান। আর এতে করে চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষা কার্যক্রম।

সরজমিন দেখা যায়, কুয়াশায় ঢাকা শীতের সকালে মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে খোলা আকাশের নিচে ক্লাস করছে শিক্ষার্থীরা। শীতের সঙ্গে তীব্র বাতাসে কষ্ট হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। জানা যায়, প্লে শ্রেণি থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত ৭টি শ্রেণিতে বর্তমান শিক্ষার্থীর সংখ্যা দুই শতাধিক। মাদ্রাসায় সাতটি কক্ষ প্রয়োজন থাকলে বর্তমানে রয়েছে পাঁচটি। এরইমধ্যে নতুন বছরে ভর্তি হয়েছে শিক্ষার্থীরা। ফলে শিক্ষার্থীদের বসিয়ে পাঠদান করাতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে শিক্ষকদের।

শ্রেণিকক্ষের সংকট নিরসনে ভবনের দ্বিতীয়তলার পিলার নির্মাণের কার্যক্রম শেষ হলেও অর্থের অভাবে এখন নির্মাণকাজ বন্ধ রয়েছে বলে জানান মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক মো. রাশিম মোল্লা। তিনি বলেন, এ বছর ছাত্র সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় শ্রেণির কক্ষ সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। এমতাবস্থায় আমরা এলাকাবাসী ও প্রবাসীদের সহযোগিতায় ভবনের দ্বিতীয়তলার কাজ শুরু করেছি। এরইমধ্যে সবগুলো পিলার নির্মাণের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু অর্থের অভাবে ছাদ ঢালাইয়ের কাজ বন্ধ রয়েছে।

মাদ্রাসার সহকারী প্রধান শিক্ষক মুফতি কবির আহমেদ বলেন, আমাদের শ্রেণিকক্ষ দরকার সাতটি আছে পাঁচটি। শ্রেণিকক্ষের অভাবে ক্লাস করাতে হচ্ছে বারান্দায়, খোলা আকাশের নিচে তাঁবু টানিয়ে।

শিক্ষার্থীরা বলেন, শীতে খোলা আকাশের নিচে ক্লাস করা খুবই কষ্টদায়ক। আমরা চাই আমাদের দ্রুত একটা শ্রেণিকক্ষের ব্যবস্থা করে দেয়া হোক। অভিভাবকরা বলেন, এভাবে কি বাচ্চারা পড়াশোনা করতে পারে। শিক্ষকরা অনেক আন্তরিক কিন্তু শ্রেণি সংকটের কারণে বাচ্চাদের লেখাপড়া বিঘ্ন ঘটছে। গরমের দিনে সূর্যের তাপে বসা যায় না, আবার শীতের মধ্যেও খোলা আকাশের নিচে ক্লাস করা যায় না। মাদ্রাসা পরিচালনা পরিষদের সহ-সভাপতি মো. আফসার উদ্দিন বলেন, মাদ্রাসা ভবন সংকটের কারণে সবাইকে ভর্তি করা যাচ্ছে না। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে যথা সামান্য যে বেতন নেয়া হয় তা দিয়ে শিক্ষকদের বেতনও হয় না। এমতাবস্থায় ভবনের দ্বিতীয়তলায় পিলার নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে। অর্থের অভাবে ছাদ নির্মাণ করা যাচ্ছে না। প্রবাসী ও এলাকাবাসীর সহযোগিতা ছাড়া ভবনের কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব নয়।

সাবেক সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ ড. আবুল হোসেন খন্দকার বলেন, আমি মাদ্রাসায় পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। মাদ্রাসাটির পড়ালেখার মান খুবই ভালো। শিক্ষার্থীরা আরবির পাশাপাশি বাংলা, অঙ্ক ও ইংরেজিতে খুবই পারদর্শী। তবে শ্রেণিকক্ষ সংকট রয়েছে। শ্রেণিকক্ষ সংকট দূরীকরণের লক্ষ্যে ঊর্ধ্বমুখী ভবন নির্মাণের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে একটি চিঠি দিয়ে অবহিত করা হয়েছে। আশা করি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিষয়টি বিবেচনায় নিবেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

অভিনব কায়দায় প্রতারণা, থানায় অভিযোগ

নবাবগঞ্জে শ্রেণিকক্ষের অভাবে খোলা আকাশের নিচে পাঠদান

Update Time : 12:03:11 am, Friday, 17 January 2025

ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার নয়নশ্রী ইউনিয়নের খানেপুর ইসলামী ইবতেদায়ী মাদ্রাসায় শ্রেণিকক্ষ সংকটে চলছে। তাই বাধ্য হয়ে খোলা আকাশের নিচে চলছে কোমলমতি শিশুদের পাঠদান। আর এতে করে চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষা কার্যক্রম।

সরজমিন দেখা যায়, কুয়াশায় ঢাকা শীতের সকালে মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে খোলা আকাশের নিচে ক্লাস করছে শিক্ষার্থীরা। শীতের সঙ্গে তীব্র বাতাসে কষ্ট হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। জানা যায়, প্লে শ্রেণি থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত ৭টি শ্রেণিতে বর্তমান শিক্ষার্থীর সংখ্যা দুই শতাধিক। মাদ্রাসায় সাতটি কক্ষ প্রয়োজন থাকলে বর্তমানে রয়েছে পাঁচটি। এরইমধ্যে নতুন বছরে ভর্তি হয়েছে শিক্ষার্থীরা। ফলে শিক্ষার্থীদের বসিয়ে পাঠদান করাতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে শিক্ষকদের।

শ্রেণিকক্ষের সংকট নিরসনে ভবনের দ্বিতীয়তলার পিলার নির্মাণের কার্যক্রম শেষ হলেও অর্থের অভাবে এখন নির্মাণকাজ বন্ধ রয়েছে বলে জানান মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক মো. রাশিম মোল্লা। তিনি বলেন, এ বছর ছাত্র সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় শ্রেণির কক্ষ সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। এমতাবস্থায় আমরা এলাকাবাসী ও প্রবাসীদের সহযোগিতায় ভবনের দ্বিতীয়তলার কাজ শুরু করেছি। এরইমধ্যে সবগুলো পিলার নির্মাণের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু অর্থের অভাবে ছাদ ঢালাইয়ের কাজ বন্ধ রয়েছে।

মাদ্রাসার সহকারী প্রধান শিক্ষক মুফতি কবির আহমেদ বলেন, আমাদের শ্রেণিকক্ষ দরকার সাতটি আছে পাঁচটি। শ্রেণিকক্ষের অভাবে ক্লাস করাতে হচ্ছে বারান্দায়, খোলা আকাশের নিচে তাঁবু টানিয়ে।

শিক্ষার্থীরা বলেন, শীতে খোলা আকাশের নিচে ক্লাস করা খুবই কষ্টদায়ক। আমরা চাই আমাদের দ্রুত একটা শ্রেণিকক্ষের ব্যবস্থা করে দেয়া হোক। অভিভাবকরা বলেন, এভাবে কি বাচ্চারা পড়াশোনা করতে পারে। শিক্ষকরা অনেক আন্তরিক কিন্তু শ্রেণি সংকটের কারণে বাচ্চাদের লেখাপড়া বিঘ্ন ঘটছে। গরমের দিনে সূর্যের তাপে বসা যায় না, আবার শীতের মধ্যেও খোলা আকাশের নিচে ক্লাস করা যায় না। মাদ্রাসা পরিচালনা পরিষদের সহ-সভাপতি মো. আফসার উদ্দিন বলেন, মাদ্রাসা ভবন সংকটের কারণে সবাইকে ভর্তি করা যাচ্ছে না। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে যথা সামান্য যে বেতন নেয়া হয় তা দিয়ে শিক্ষকদের বেতনও হয় না। এমতাবস্থায় ভবনের দ্বিতীয়তলায় পিলার নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে। অর্থের অভাবে ছাদ নির্মাণ করা যাচ্ছে না। প্রবাসী ও এলাকাবাসীর সহযোগিতা ছাড়া ভবনের কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব নয়।

সাবেক সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ ড. আবুল হোসেন খন্দকার বলেন, আমি মাদ্রাসায় পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। মাদ্রাসাটির পড়ালেখার মান খুবই ভালো। শিক্ষার্থীরা আরবির পাশাপাশি বাংলা, অঙ্ক ও ইংরেজিতে খুবই পারদর্শী। তবে শ্রেণিকক্ষ সংকট রয়েছে। শ্রেণিকক্ষ সংকট দূরীকরণের লক্ষ্যে ঊর্ধ্বমুখী ভবন নির্মাণের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে একটি চিঠি দিয়ে অবহিত করা হয়েছে। আশা করি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিষয়টি বিবেচনায় নিবেন।