বঙ্গোপসাগরে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত জারির কারণে টানা চারদিন ধরে ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে চট্টগ্রামের বাশঁবাড়িয়া গুপ্তছড়া ফেরিঘাটে। এতে ঘাট এলাকায় আটকে পড়েছে শতাধিক পণ্যবাহী ট্রাক, দূরপাল্লার বাস এবং ছোট যানবাহন। ফলে পণ্যবাহী গাড়ির চালক, সহযোগী এবং সাধারণ যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।
শুক্রবার বিকেলে সরেজমিনে ঘাট এলাকায় দেখা যায়, ট্রাক টার্মিনালজুড়ে দীর্ঘ সারিতে দাঁড়িয়ে রয়েছে শতাধিক ট্রাক বাস ও ছোট ছোট গাড়ি । এসব গাড়ি দীর্ঘ সময় ধরে ফেরির অপেক্ষায় থাকলেও অনিশ্চয়তার কারণে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারছে না।
চালক শফিকুল ইসলাম বলেন,“চারদিন ধরে এখানে বসে আছি। খাওয়ার-দাওয়ার খুব কষ্ট হচ্ছে। এখানে গোসল বা টয়লেটের তেমন কোনো সুব্যবস্থা নেই। ঘাটে থাকা আমাদের জন্য দুর্ভোগে পরিণত হয়েছে।”
আরেক চালক রফিকুল ইসলাম বলেন, আমাদের ট্রাকে জরুরি মালামাল আছে। সময়মতো গন্তব্যে না পৌঁছালে মালিকের ক্ষতি হবে। কিন্তু আমরা কিছুই করতে পারছি না।”
ফেরি চলাচল বন্ধের কারণ জানতে চাইলে প্রশাসনের ও ঘাট কর্তৃপক্ষ জানায়, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে স্থানীয় সমুদ্র বন্দরসমূহকে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। এ অবস্থায় নিরাপত্তার স্বার্থে ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।
ঘাটে দায়িত্বপ্রাপ্ত এক কর্মকর্তা জানান,“সতর্ক সংকেত উঠিয়ে নেওয়া না হলে ফেরি চলাচল পুনরায় শুরু করা সম্ভব নয়। আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। আবহাওয়া অনুকূলে আসলেই ফেরি চলাচল স্বাভাবিক করা হবে।”
এদিকে, পণ্যবাহী ট্রাকগুলো ঘাটে আটকে থাকায় বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, যদি দ্রুত ফেরি চলাচল শুরু না হয়, তাহলে কিছু পণ্যের দাম বাজারে বাড়তে পারে।
এক ব্যবসায়ী বলেন,“গাড়ি আটকে থাকার কারণে মালামাল সময়মতো আসছে না। এতে আমাদের বিক্রি ও সরবরাহ ব্যাহত হচ্ছে।”
পুনরাবৃত্তি দুর্ভোগ উল্লেখ্য, গত ২০ দিন আগেও একটি ঘূর্ণিঝড়ের কারণে এই ফেরিঘাটে টানা ছয়দিন ফেরি চলাচল বন্ধ ছিল। তখনও একইভাবে শতাধিক ট্রাক আটকে পড়েছিল এবং চালক-সহযোগীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছিল।
এ পরিস্থিতিতে সংশ্লিষ্টরা দাবি জানিয়েছেন, যতদিন ফেরি চলাচল বন্ধ থাকবে, ততদিন ঘাট এলাকায় আটকে থাকা চালক, সহযোগী এবং যাত্রীদের জন্য জরুরি খাদ্য, পানি, স্বাস্থ্যসেবা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হোক।
ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় গন্তব্যে পৌঁছাতে না পারা মানুষজন এবং পণ্য পরিবহনে সংশ্লিষ্টদের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। আবহাওয়া অনুকূলে ফিরে আসার আগ পর্যন্ত এ দুর্ভোগ কমার কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। প্রশাসনের দ্রুত উদ্যোগ ও বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণই হতে পারে সমাধানের পথ।